সেরা তিনটি উপন্যাস / প্রমিতা দাস লাবণী

অর্হণা

অর্হণা, ড. মোহাম্মদ আমীন-এর লেখা স্যমন্তক সিরিজের দ্বিতীয় উপন্যাস। উভয়ের মধ্যে চরিত্রগত সম্পর্ক থাকলেও প্রত্যেকটি উপন্যাস আলাদা আঙ্গিকে রচিত। গ্রন্থটির আলোচনা করতে গিয়ে, হায়াৎ মামুদ লিখেছেন, অর্হণার পাণ্ডুলিপিটি,

আমার বয়স ত্রিশ বছর কমিয়ে দিয়েছিল। পড়তে পড়তে আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম বিংশ শতকের সত্তরের দশকে। আমার বর্তমান অবস্থানকে ভুলিয়ে দিয়েছিল উপন্যাসটির বৈচিত্র্যময় পরম্পরা। এমন অলৌকিক কাণ্ড যে উপন্যাস ঘটাতে পারে, সেটি কত আকর্ষণীয় এবং আত্মহরি হতে পারে তা সহজে অনুমেয়। আমি মনে করি, অর্হণা’ যিনিই পড়বেন, তাঁর কাছেই ভালো লাগবে, অভিভূত হবেন কারুময় সৌন্দর্য। এটি অর্হণা’র পাণ্ডুলিপিটাকে শ্রেষ্ঠ মনে হওয়ার অন্যতম কারণ। ঘটনা, খ্যাতিমান চরিত্রবর্গ, চরিত্রসমূহের সরব উপস্থিতি, রাজসিক আলোচনায় সর্বজনীন হিত, সাড়ম্বর দৃশ্যপট, দৃশ্যপটের মনোহর নৈসর্গিকতায় শহুরে বিমোহন, দলিতদের প্রতি মমতা, কিছু স্পর্শকাতর সম্পর্ক, হৃদয় আলোড়িত কথোপকথন, বুদ্ধিমত্তার অপূর্ব নিদর্শনপ্রসূত দার্শনিক উপলব্ধি, মনোবৃত্তিক উদারতায় হৃদয়ভিত্তিক জটিলতার স্বরূপ, প্রেম-ভালোবাসার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিউরে তোলা পরিঘটনার পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহ প্রভৃতি আমাকে প্রবলভাবে মুগ্ধ করেছে।অর্হণা যিনিই পড়ুন, মুগ্ধ হবেন, অভিভূত হবেন সোল্লাস প্রাপ্তির মাদকীয় ভাবনায়। প্রফেসর সাহিদা সুলতান বলেছেন, “অর্হণার পাণ্ডুলিপি পড়ে আমি আনন্দ, রোমাঞ্চ আর ঋদ্ধ সঞ্চয়নে অভাবনীয়ভাবে অলংকৃত হয়েছি। এমন বৈচিত্র্যময় প্রেক্ষাপট একসঙ্গে আর কোনো উপন্যাসে পাইনি। বিশেষ করে মনোহর বাক্য-বিন্যাস ও হৃদয়মথিত কথোপকথন আমাকে মুগ্ধতার শেষ প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রায় পুরো পৃথিবী এই উপন্যাসের ক্ষেত্র। উভয় বাংলার কালজয়ী কবিসাহিত্যিকগণ এই উপন্যাসের মূল চরিত্র। এছাড়াও রয়েছে বিশ্বসাহিত্যের নামকরা কয়েকজন পণ্ডিত।”

বিংশ শতকের অর্ধশতাধিক খ্যাতিমান সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, কুটনীতিবিদ, রাজনীতিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং তাদের গুণান্বিত আলোচনার বিরল বাক্যে ‘অর্হণা’ সজ্জিত। উপন্যাসের নায়ক-নায়িকা থেকে প্রায় সব চরিত্র খ্যাতিমান ও পরিচিত। এমন গুণবান ও প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের নিয়ে লেখা উপন্যাস অর্হণা’ পড়তে শুরু করলে নিজের অজান্তে চলে যেতে হয় সে গুণবানদের আলাপচারিতায়। এই

উপন্যাসের কয়েকজন চরিত্রের মধ্যে আহমদ ছফা, অন্নদাশঙ্কর রায়, ড. মফিজ আলী চৌধুরী, আহমদ শরীফ, কবীর চৌধুরী, ডাক্তার নুরুল ইসলাম, শামসুর রাহমান, সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল গাফফার চৌধুরী, সরদার ফজলুল করিম, মযহারুল ইসলাম, আবদুল মাননান সৈয়দ, নরেন বিশ্বাস, আল মাহমুদ, হুমায়ুন আজাদ, আবদুল কাইউম, আসকার ইবনে সাইখ, শফিউদ্দীন আহমেদ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, প্রফেসর গ্রিয়েল, প্রফেসর ব্রুম, প্রফেসর মিন্ড্রা, শ্রাবন্তীনাহা, শাহিদা সুলতানা, অরুণাভ সরকার, আবদুল আলিম, নাজিম উদ্দিন মোস্তান, ওসমান গনি, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হায়াৎ মামুদ, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ আলী আহসান, কে এম শিহাব উদ্দিন, আখতারুজ্জামান বাবু, প্রফেসর কোবাইসি মাসাহিতো, অধ্যাপক টিআই চোধুরী, ভাষাবিষারদ প্রফেসর রচনাসহ আরও অনেক কালজয়ী কবি-সাহিত্যিক এই উপন্যাসের চরিত্র। উপন্যাসটি কেমন হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব, ভাষা মানুষকে এখনো এমন হাতিয়ার দিতে পারেনি, যদ্দ্বারা মানুষ তার সব উপলব্ধিকে বাক্য-ভাষায় অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারে। তেমনি অর্হণার পাণ্ডুলিপি পারে আমার অনুভবে সঞ্চারিত আবেশরাশিকে সম্পূর্ণরূপে কথায় প্রকাশ করতে পারব না। শুধু বলব, অসাধারণ, অসাম, হৃদয়কাড়া একটি উপন্যাস।যার প্রত্যেকটি লাইন নীরব চন্দ্রিমায় রাতের কোলে ঘেষেও জোছনাকে বাক্য বানিয়ে পাঠকের মনে বিপুল ঝড় তুলে দিতে নিমিষ চিন্তার মতো কিন্তু প্রকৃতির মতো বিরল স্থায়িত্বে। তাই বইটি কেমন? প্রশ্নের উত্তরে দ্বিধাহীনভাবে বলতে পারি, এর অবিকল উত্তর পেতে হলে ‘অর্হণা’ পড়তে হবে। অর্হণা এমন একটি উপন্যাস যা আপনাকে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিসাহিত্যিক ও পণ্ডিতবর্গের বন্ধু বানিয়ে দিতে সক্ষম হব। আমি বলব, অর্হণা শুধু উপন্যাস নয়, পাঠকের তীর্থভূমি। যেখানে প্রকৃতি বিছিয়ে রেখেছে তার অশেষ ঐশ্বর্য থরে থরে। ‘অর্হণা’রূপ উপন্যাসের তীর্থক্ষেত্র থেকে আপনি পেতে পারেন সাহিত্যের নির্ঝর সমৃদ্ধি, বিমল মুগ্ধতা। পরিচিত হতে পারেন বাংলা ও বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে।


তিনে দুয়ে দশ

‘তিনে দুয়ে দশ’ ড. মোহাম্মদ আমীন-এর লেখা একটি অনবদ্য উপন্যাস। অনবদ্য বলার কারণ আছে। এটি শুধু কথার কথা নয়। নিজের অভিজ্ঞতা হতে লিখিত এই উপন্যাসটি শিশুকিশোর হতে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্য উপযোগী, সবার মনে দাগ কাটতে সক্ষম। শিশু-কিশোরদের মনমানসিকতাকে আদর্শ চেতনায় জাগ্রত করতে হলে বয়স্কদের কী করতে হবে, কেমন হতে হবে এবং কীভাবে করতে হবে সেটি ছাড়াও এ বিষয়ে অভিভাবক, শিক্ষক ও সমাজের কর্তব্য কী, তা অতি হৃদয়গ্রাহী ভাষায় অনুপম এক গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।



লেখক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন টিউশনি করতেন। ওমর নামের তাঁর এক ছাত্র ছিল। ছাত্রটি ছিল খুব ডানপিটে, দুষ্ট, বেপরোয়া এবং উচ্ছৃঙ্খল বেয়াদব। সে গৃহশিক্ষকের নিকট থেকে বেতনের কমিশন নিত, তাদের সঙ্গে অত্যন্ত রূঢ় আচরণ করত। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে অবহেলাজনক ব্যবহার করত। ওমরের পিতা খুব প্রভাবশালী ছিলেন। তাই স্কুলের শিক্ষক বা স্কুল কমিটি ওমরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করতেন না। এমন অসভ্যতা করত বলে কোনো শিক্ষকই তাকে পড়াত না। পড়াতে এলেও কয়েক দিন পড়িয়ে চলে যেতেন। এমন এক অবস্থা উপনীত হয় যে, কোনো শিক্ষকই তাকে পড়ানোর জন্য পাওয়া যাচ্ছিল না। স্কুলের শিক্ষক এবং সহপাঠীরাও ওমরকে এড়িয়ে চলত। ক্রমশ সে খুব একা হয়ে পড়েছে। লেখকের এক বন্ধু, লেখককে ওমরের গৃহশিক্ষক হওয়ার প্রস্তাব করে। লেখক রাজি হয়।ওমরকে পড়াতে গিয়ে প্রথম দিনেই লেখক হতভম্ব হয়ে পড়েন। ওমরের আচরণ খুবই রূঢ় এবং অপমানজনক। বেতনের ৩০% কমিশন চেয়ে বসে সে। লেখক অপমানিত বোধ করলেও মনে মনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠেন। দেখা, যাক কী করা যায়। তিনি ওমরকে উচ্ছৃঙ্খল জীবন থেকে

ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় নিয়ে নেন নিজ মনে। তাই ‍ওমরের সব অপমান কৌশলে হজম করে নিতে থাকেন। ওমর শিক্ষকেকে তার বালিকা-বান্ধবীর জন্য প্রেমপত্র লিখে দিতে বলতেন। ক্লাসের সবার নিচে ছিল ওমরের স্থান। লেখক তার শিক্ষকের ভার নেওয়ার পর ওমর আরো বেশি উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ে। কিন্তু অন্য শিক্ষকের মতো লেখক তাকে ছেড়ে চলে যাননি। ভালোবাসা দিয়ে ওমরকে পরিবর্তনের প্রত্যয়ে আরো দীপ্ত হয়ে ওঠেন। আস্তে আস্তে ওমরের পরিবর্তন আসতে থাকে। পরের বছরের বার্ষিক পরীক্ষায় ওমর শেষস্থান থেকে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়। কীভবে এক বছরের মধ্যে এমন পরিবর্তন সম্ভব হয়েছিল, তা এই গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা কিশোর উপন্যাসটি কিশোরদের শুধু আনন্দ দেবে না, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার অনুপ্রেরণাও জোগাবে। সর্বোপরি, কিশোরদের সঙ্গে মা-বাবা ও পরিবেশের মধ্যে কেমন সম্পর্ক হওয়া উচিত -- তাও অনবদ্য বাস্তবতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এমন একটি কিশোর উপন্যাস পড়তে পেরে আমি সত্যি বিমোহিত।

অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ

লেখকের জীবন থেকে নেওয়া এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে পুথিনিলয়। পাওয়া যাবে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের অমর একুশে গ্রন্থমেলার পুথিনিলয় স্টলে। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেছেন মামুন হোসাইন। শুধু উপন্যাসটি নয়, ভূমিকাও অনবদ্য। হায়ৎ মামুদের লেখা ভূমিকা পড়লে আপনার অনুভূতিতে অন্যরকম আলোড়ন সৃষ্টি হবে। এমন ভূমিকা আমি আর কখনো পড়িনি। দেখুন, কেমন বইটর ভূমিকা।






বড়ো হুজুর ও বরুমতির মেলা

বড়ো হুজুর ও বরুমতির মেলা ড. মোহাম্মদ আমীন-এর লেখা একটি উপন্যাস। শিশুকিশোর হতে সর্বসস্তরের সর্ববয়সের পাঠকের উপযোগী এই গ্রন্থটিতে একজন কিশোরের করুণ কাহিনীর চিত্র জীবন্ত দেদীপ্যমানতার সঙ্গে অঙ্কিত হয়েছে। সবার উপযোগী উপন্যাসটি যেমন হৃদয় বিদারক তেমনি প্রত্যশার বিরল প্রাপ্তিতে ভরপুর এক অবিরাম মাধুর্য যেন। বইটি সম্পর্কে এক আলোচনায় লেখক কী বলেছেন, তা নিচে লেখকের জবানিতে তুলে ধরা হলো। বড়ো হুজুর, বরুমতি এবং একটি শিশুকে নিয়ে বইটি রচিত। লেখকের নিজের জবানিতে উপন্যাসটি রচিত। বড়েোহজুর শিশুটির পিতামহ। বরুমতি একটি খাল। বর্ষাকালে বরুমতি প্রচণ্ড প্রতাপশালী হয়ে উঠত। জলের তোড়ের দুকূল ভাসিয়ে দিত। একসময় সারা বছরই কিছু না কছিু জল থাকত। বরুমতি এখন বর্ষা ছাড়া প্রায় সারা বছর জলহীন থাকে, মৃতপ্রায়। বলা হয়, বড়ো হুজুরের সঙ্গে বেয়াদবি করায় এবং বড়ো হুজুরের জমি, বালি দিয়ে ভরাট করে দেওয়ায়, হুজুরের অভিশাপে বরুমতির এই করুণ মৃতপ্রায় অবস্থা হয়েছে। বরুমতির তীরে প্রতিবছর চৈত্রসংক্রান্তিতে একদিনের জন্য বিরাট মেলা বসত। মেলা নিয়েও আছে মেলা কাহিনি। মেলা উপলক্ষ্যে পুরো এলাকায় সাজ সজ রব পড়ে যেত। মেলার দিন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বরুমতির জলে স্নান করত। স্নান করলে সব উদ্দেশ্য পূরণ হতো। পাপ সব ধুয়ে মুছে বরুমতির জলের সঙ্গে অজানায় চলে যেত। নানা উদ্দেশ্যে নানা কিছু মানত করত। মুসলমানেরাও মেলায় যেত, তবে স্নান করত না। মেলায় হাজার হাজার শিশুকিশোর, যুবক-যুবতী আর বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সামগম হতো। নানা ধরনের খাবার, শস্য, সব্জি, হস্তশিল্পজাত দ্রব্য, খেলনা প্রভৃতি পাওয়া যেত। মেলায় গেলে দোলনা, নাগরদোলা প্রভৃতি আকর্ষণীয় বিষয় উপভোগ করা যেত। তাই মেলার প্রতি শিশুদের প্রবল আকর্ষণ ছিল।শিশুলেখকের সমবয়সী শিশুদের অনেকে বরুমতির মেলায় যেত। কিন্তু লেখক যেতে পারত না। বড়ো হুজুর যেতে দিতেন না। ঘরে আটকে রাখতেন।



লেখক বরুমতির মেলায় যাবার জন্য কাঁদত। তার সমবয়সী অনেকে তার সামনে দিয়ে মেলায় যেত। মেলা থেকে নানা খাবার, খেলনা,বাঁশি প্রভৃতি নিয়ে আসত। এসব দেখে আমার বুক ভেঙে যেত। কষ্টে ছটফট করত। তবু যেতে দিত না। পিতামহের ভাষ্য ছিল : “ মুসলমানদের জন্য হিন্দুদের মেলায় যাওয়া পাপ। হিন্দুদের মেলায় যারা যায়, তারা বেহেশতে যেতে পারে

না। তারা পাপিষ্ঠ হয়ে যায়, দোযখের আগুনে জ্বলা ছাড়া তাদের অন্য কোনো গতি থাকে না।” লেখক পিতামহের এসব কথা বিশ্বাস করলেও পাত্তা দিতাম না। মেলায় যাবার জন্য দোযখের আগুনের ভয় তুচ্ছ করে নানা বায়না ধরত। পিতামহ ছিলেন এই ব্যাপারে খুব কঠোর। তিনি বড়ো হুজুর। প্রয়োজনে জবাই করে দেবেন। তবু মেলায় যেতে দেবেন না। বড়ো হুজুরের নাতি হিন্দুদের মেলায় যাবে- এমন হতে পারে না। শুধু তাই নয়, পুস্তক ক্রয়েও ছিল নানা নির্দেশনা। নির্দিষ্ট কিছু পুস্তক ক্রয় করা এমন কি ধরাও নিষিদ্ধ ছিল। একদিন ছোটদের মহাভারত নামের একটা বই কিনে নিয়ে এনেছিল বলে তাকে বেত্রাঘাত শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। দোযখের আগুন হতে মুক্ত করার জন্য বড়ো হুজুর, শিশুনাতির প্রতিটি কোষে আঘাত করেছিল।ধর্মীয় বিশ্বাস কীভাবে বড়ো হুজুরের নাতির ইচ্ছাকে অবদমিত করেছিল, কত শাস্তি তাকে পেতে হয়েছিল শিশু লেখকের মেলায় যাওয়া রোধ করার জন্য বড়ো হুজুর কত নৃশংস হয়ে উঠতেন এবং কী ব্যবস্থা নিতেন; অন্যদিকে, লেখক মেলায় যাওয়ার জন্য কী করতেন ইত্যাদি বিষয় বইটির বিষয় বস্তু। পুস্তকটিতে তৎকালীন ধর্মীয় গোঁড়ামির নির্যাতনে পিষ্ঠ এক অসহায় শিশুর জীবনচরিতের একটি করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এটি শুধু উপন্যাস নয়, যেন কালের পরিক্রমায় চলে আসার একটি জীবন্ত জীবন কাহিনী। যার মূল্য ইতিহাসের চেয়েও অধিক। বইটির প্রকাশক পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা। মূল্য ১২০ টাক। পাওয়া যাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পুথিনিলয়-এর স্টলে।

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন