Posts

Showing posts from December, 2017

শ্রদ্ধা ও সম্মান / ড. মোহাম্মদ আমীন

শ্রদ্ধা [শ্রৎ+√ধা+অ+আ(টাপ্‌)] শব্দের অর্থ সাধারণত কোনো ব্যক্তির প্রতি বিশেষ সম্মান, ভক্তি, সমীহ, গভীর আস্থা, নির্ভরতা, নিষ্ঠা প্রভৃতি। এটি সংস্কৃত শব্দ এবং বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।শ্রদ্ধাঞ্জলি, শ্রদ্ধান্বিত, শ্রদ্ধাবান, শ্রদ্ধাবনত, শ্রদ্ধাভাজন, শ্রদ্ধাভাজনাসু, শ্রদ্ধাভাজনেষু, শ্রদ্ধার্ঘ্য, শ্রদ্ধালু, শ্রদ্ধাস্প , শ্রদ্ধাস্পদাসু, শ্রদ্ধাস্পদেষু, শ্রদ্ধাহীন, শ্রদ্ধেয় প্রভৃতি ‘শ্রদ্ধা’ সঙ্গের সমগোত্রীয়। সম্মান (সম্‌+√মন্‌+অ) শব্দের অর্থ মান মর্যাদা গৌরব, সশ্রদ্ধ খাতির, সমাদর প্রভৃতি। এটি তৎসম এবং বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মান্য ব্যক্তিকে প্রদত্ত সম্মানি অর্থেও সম্মান শব্দের প্রয়োগ দেখা যায়। সম্মানন, সম্মাননা, সম্মাননীয়, সম্মানি, সম্মানিত প্রভৃতি শব্দ অর্থ বিবেচনায় সম্মান শব্দের সমগোত্রীয়। বাকি অংশ

আদেশ নির্দেশ আদেশক্রমে নির্দেশক্রমে / ড. মোহাম্মদ আমীন

আদেশ নির্দেশ আদেশক্রমে নির্দেশক্রমে / ড. মোহাম্মদ আমীন বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানমতে, সংস্কৃত ‘আদেশ’ (বিশেষ্য) শব্দের অর্থ হুকুম, অনুমতি, উপদেশ, অনুশাসন, নিয়োগ প্রভৃতি। একই অভিধানমতে, সংস্কৃত ‘নির্দেশ’ (বিশেষ্য) শব্দের অর্থ নির্ধারণ, স্থিরীকরণ, বিশেষভাবে প্রদর্শন, আদেশ, উপদেশ, পরিচালন প্রভৃতি। অতএব অর্থ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘আদেশ’ ও ‘নির্দেশ’ সমার্থক। ‘আদেশক্রমে’ ও ‘নির্দেশক্রমে’ শব্দদুটির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য হতে পারে। তবে ‘আদেশ‘ ও ‘আদেশক্রমে’ শব্দদুটি যথাক্রমে নির্দেশ ও নির্দেশক্রমে শব্দের চেয়ে অধিকতর নমনীয়, ভদ্রোচিত এবং শালীন বিবেচনা করা হয়। এজন্য, আগে যেখানে ‘আদেশ’ বা ‘আদেশক্রমে’ লেখা হতো এখন সেখানে বহুক্ষেত্রে ‘অনুরোধ’ বা ‘অনুরোধক্রমে’ লেখা হচ্ছে। যেমন : তাকে তিন দিনের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করার অনুরোধ করা হলো। ‘আদেশ’ শব্দটি উপদেশ এবং কিছুটা অনুরোধও নির্দেশ করে কিন্তু ‘নির্দেশ’ শব্দে অনুরোধের কোনো অস্তিত্ব নেই। বিচার ব্যবস্থায় কিংবা মামলা-মোকাদ্দমার ক্ষেত্রে ‘আদেশ’ শব্দটির চেয়ে ‘নির্দেশ’ শব্দটি অধিক ব্যবহৃত হয়। ‘আদেশ’ শব্দের চেয়ে ‘নির্দেশ’

ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল / ড. মোহাম্মদ আমীন

Image
ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল ড. মোহাম্মদ আমীন "ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল, কিছু দূর গিয়া মর্দ রওনা হইল। ছয় মাসের পথ মর্দ ছয় দিনে গেল! লাখে লাখে সৈন্য মরে কাতারে কাতার, শুমার করিয়া দেখি পঞ্চাশ হাজার।" এটি একটি বহুল প্রচলিত কবিতা। মধ্যযুগে লিখিত কবিতাটির বিষয়বস্তুকে অনেক সাংঘর্ষিক মনে করেন। তাদের যুক্তি, নইলে ঘোড়ায় চড়ে মর্দ কীভাবে হেঁটে চলল। কিন্তু নিয়মানুসারে মর্দকে ঘোড়ায় চড়ার পর হেঁটে চলতেই হবে। তারপর কিছুদূর গিয়ে রওয়ানা হতে হবে। নইলে পরীক্ষা না করে বিমান ছাড়ার মতো বোকামি হবে। কোনো পাইলট এমন করবে বলে মনে হয় না। কবিতায় বর্ণিত মর্দ বা মরদ ফারসি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পুরুষ, পতি, যুবক, বীর, পুরষোচিত গুণসম্পন্ন, পুরুষজাতীয় প্রভৃতি। তবে প্রাচীন বাংলা কাব্যে শব্দটি মূলত বীর ও পুরুষোচিত গুণসম্পন্ন মানুষ প্রকাশে ব্যবহৃত হতো। এই বীর যে কেবল পুরুষ হবে তা ঠিক না।সুলতানা রাজিয়া বীর ছিলেন, পুরষোচিত গুণসম্পন্ন ছিলেন।তবে অধিকাংশ বীর ও ঘোড়সওয়ার পুরুষ ছিল। তাই মর্দ ও পুরুষ শব্দ অনেকটা সমার্থক হয়ে উঠেছিল। যুদ্ধক্ষেত্রের কাব্যিক বর্ণনায় মর্দ শব্দটি বীর প্রকাশের জন্য ব্যবহার ক

রাজা বাদশা নবাব সম্রাট শাহেনশাহ / ড. মোহাম্মদ আমীন

রাজা ও বাদশা শব্দের অন্তর্নিহিত অর্থ অভিন্ন। তবে প্রায়োগিক অর্থ ভিন্ন। ‘রাজা’ সংস্কৃত শব্দ এবং ‘বাদশাহ’ ফারসি শব্দ। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান (প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০১৬) অনুযায়ী 'রাজা' অর্থ দেশশাসক, নৃপতি, ভূপতি, পদবিশেষ, অতিশয় ধনিব্যক্তি, দাবা খেলার ঘুঁটিবিশেষ। 'বাদশাহ' শব্দের অর্থ মুসলমান সুলতান বা সম্রাট, রাজাধিরাজ। দুটো শব্দই শাসক অর্থ প্রকাশে ব্যবহৃত। হিন্দু শাসককে বলা হয় ‘রাজা’ এবং মুসলিম শাসককে বলা হয় ‘বাদশাহ’। ‘রাজা’র চেয়ে ‘বাদশা’র শাসন অধিক্ষেত্র সাধারণভাবে ব্যাপক হতো। ছোটো ভুখণ্ড বা জনপদ নিয়েও রাজার অস্তিত্ব ছিল। প্রাচীনকাল হতে উপমহাদেশ, হিন্দুদের দ্বারা অর্থাৎ রাজাদের দ্বারা শাসিত হয়ে আসছিল। এখানে ছোট ছোট অনেক রাজ্য ছিল, যা রাজারাই শাসন করত। নবাব হচ্ছে নওয়াবার একটি শাব্দিক রূপ। নওয়াব শব্দটি আরবি নায়েব (প্রতিনিধি) শব্দের বহুবচন। তবে তা একবচন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হিন্দি ভাষায় নওয়াব শব্দটির উচ্চারণ করা হয় নবাব। নবাব শব্দের সাধারণ আভিধানিক অর্থ, মুসলমান সামন্তশাসক। এটি মুগল প্রাশাসনিক ব্যবস্থায় রাজনীতিক পদমর্যাদা ও ক্ষমতানির্দেশক একটি পদবিবিশেষ। ব