Posts

Showing posts from June, 2015

নাকানিচুবানি / ড. মোহাম্মদ আমীন

নাকানিচুবানি অসহায়ভাবে অপমানিত হওয়া, লাঞ্ছিত হওয়া বা করা। নাকানি ও চুবানি শব্দ দুটোর সংযোগে নাকানিচুবানি শব্দের উৎপত্তি। নাক পর্যন্ত যে পানি তার এককথায় প্রকাশ হল নাকপানি। অন্যদিকে চুবানি শব্দের অর্থ হচ্ছে পানিতে ডোবানো ও ভাসানো। সুতরাং নাকানিচুবান শব্দের অর্থ হচ্ছে নাক পর্যন্ত পানিতে ডোবানো ও ভাসানো। নাক পর্যন্ত কাউকে পানিতে ডুবালে তার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়। আবার ভাসালে সে নিঃশ্বাস নিতে পারে এবং সঙ্গে সঙ্গে আবার নাক পর্যন্ত ডোবালে আবার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এভাবে কাউকে বারবার পানিতে নাক পর্যন্ত ডোবান ও ভাসান হলে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কষ্টে তার অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে। এটি খুব কষ্টকর অবস্থা। ব্যক্তি জীবনে মানুষ যখন কোনও কারণে এমন কষ্টকর অবস্থায় পড়ে সেটি প্রকাশের জন্য নাকানিচুবানি বাগভঙ্গি ব্যবহার করা হয়। ==================== সূত্র :পৌরাণিক শব্দের বাংলা উৎস, ড. মোহাম্মদ আমীন

ধান/ ড. মোহাম্মদ আমীন

ধান ‘ধান’ এক প্রকার খাদ্যশস্য। বাংলাভাষী সবার কাছে এটি অতি পরিচিত ও প্রিয় একটি শস্য। পৃথিবীর সবদেশে সব মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ‘ধান’ নামক এ শস্যটি সৃষ্টির সূচনা হতে মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে অবিচ্ছেদ অনুপমতায় জড়িয়ে। তবে ধান শব্দটি বাংলা নয়। সংস্কৃত ‘ধান্য’ শব্দ হতে বাংলা ‘ধান’ শব্দের উৎপত্তি। সংস্কৃতে ‘ধান্য’ শব্দের অর্থ যাহা পোষণ করে। সে অর্থে যে সকল শস্য দেহ পোষণ করে সেগুলো ধান্য। সংস্কৃত ‘ধান্য’ শব্দের এ অর্থ বিবেচনায় গম, যব, ভুট্টা প্রভৃতিও ধান্য। কিন্তু বাংলায় ‘ধান ’ বলতে কেবল যার থেকে চাল বের করা হয় সেটাকে বোঝায়। সংস্কৃত ভাষায় ধান্যকে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা : শালি, ব্রীহি, শূক, শিম্বি ও ক্ষুদ্র। শালি হলো সে-ই শস্যদানা বাংলা ভাষায় যাকে ধান বলা হয়। এ শস্যদানা সতুষ অবস্থায় ধান, নিষ্তুষ করলে চাল এবং সিদ্ধ করলে ভাত হয়। ব্রীহিধান্য হলো : তিল; শূকধান্য হলো যব ও গম; শিম্বিধান্য হলো কলাই এবং ক্ষুদ্র ধান্য হল কাউন। সংস্কৃত ভাষায় ধান্য বলতে যা-ই বুঝান হোক না কেন, বাংলা ভাষায় ধান বলতে কেবল শালিধান্যকে বোঝায়। যার থেকে চাল বের করে সিদ্ধ করলে ভাত হয়। এটিই আমরা তর

নাহয় - না হয় / ড. মোহাম্মদ আমীন

না হয়/ নাহয় ‘না হয়’ ও ‘নাহয়’ অভিন্নার্থক মনে হলেও উভয়ের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ‘না হয়’ বাগ্্ভঙ্গি ইতিবাচক অর্থে কোনও বিষয়ের গুরুত্ব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।  যেমন : ‘আমি না হয় খারাপ কিন্তু আমার কথা তো খারাপ নয়।’  তবে ‘নাহয়’ শব্দটি ‘পক্ষান্তরে/বরং’ ইত্যাদি অর্থ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। ইংরেজিতে এর প্রতিশব্দ হতে পারে otherwise.  যেমন : আমি ‘নাহয়’ আমার জুনিয়র মামলাটি দেখবে।

কিনা/ কি না : ড. মোহাম্মদ আমীন

কি না/কিনা ‘কি না’  দুটো  পৃথক শব্দের অর্থ দ্যোতক একটি বাগভঙ্গি কিন্তু ‘কিনা’ একটি শব্দ। ‘কি না’ প্রশ্নজ্ঞাপক। যেমন : ‘যাবে কি না বল?’ অন্যদিকে মনোভাবের ইঙ্গিত প্রকাশে কিংবা শুধু অলংকার হিসাবে বাক্যে ‘কিনা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।  যেমন : হরতাল কিনা, তাই তার আসতে দেরি হয়েছে। আমার সন্তান হয়ে কিনা আমার অবাধ্য হয়। ‘কিনা’ শব্দটি বাক্যে অত্যাবশ্যক নয়। বাক্য হতে এটি বাদ দিলেও অর্থের হেরফের ঘটে না। কিন্তু ‘কি না’ শব্দটি বাক্য হতে তুলে নিলে বাক্যের ভাব ও  অর্থের পরিবর্তন ঘটে। যেমন : ‘যাবে কি না বল? বাক্যটি হতে ‘কি না’ শব্দটি সরিয়ে নিলে বাক্যটির পুরো অর্থই পাল্টে যায়। অর্থ যখন ‘কিংবা নয়’, ‘কিংবা নেই’ বা ‘কিংবা নাই’ তখন বুঝতে হবে ‘কি’ প্রকৃতপক্ষে ‘কিংবা’ শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। প্রয়োগ : তুমি খেয়েছ কি না আমি জানি না। বিশ্লিষ্ট অবস্থায় বাক্যটির রূপ হবে ‘তুমি খেয়েছ কিংবা খাওনি এটা আমি জানি না।’  ‘না কি’ ও ‘কিনা’ বাগ্‌ভঙ্গির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

সৎমা / ড. মোহাম্মদ আমীন

সৎমা ‘সৎ’ অর্থ ভালো, সুতরাং ‘সৎমা’ অর্থ ভালো যে মা। কিন্তু সৎমায়ের মতো নিষ্ঠুর আর কেউ কী আছে? সৎমায়ের নৃশংসতার কতো করুণ কাহিনি প্রত্যহ আমাদের শুনতে হয়, অনেককে দেখতে হয়, কাউকে কাউকে ভুগতেও হয়। তো এমন নিষ্ঠুর ও নৃশংস মায়ের নাম কীভাবে ‘সৎমা’ হলো? সংস্কৃত সপত্নী থেকে ‘সতিন’ এবং সতিন থেকে ‘সৎ’ এসেছে।  এ ‘সৎ’ এর সঙ্গে ‘মা’ যুক্ত হয়ে গঠিত হয়ছে সৎমা। মূলত সতীনের ‘সৎ’ থেকে ‘সৎমা’ শব্দের উৎপত্তি। তাই ‘সৎমা’ শব্দের ‘সৎ’ ভালো ‘সৎ’ নয়; সতিন সৎ।  মঞ্জুভাষণ হিসাবেও অনেকে ‘সৎমা’ শব্দের ব্যুৎপত্তি বিশ্লেষণ করে থাকেন। জনৈক পণ্ডিতের স্ত্রী মারা যায়। সন্তানের লালন-পালনের জন্য পণ্ডিত নতুনবউ ঘরে তুলতে বাধ্য হন। বিয়ের পূর্বে নতুন বউকে কথা দিতে হয়েছিল তিনি সততার সঙ্গে এবং সৎ থেকে পণ্ডিতের সন্তানদের লালনপালন করবেন। পণ্ডিতের বাড়ি আসে নতুন বউ। অনেকে জানতে চাইতেন ‘এ কোন ধরনের মা?’ পণ্ডিত বলতেন ‘সৎমা’। খুশি হতেন পণ্ডিতের নতুন বউ। এখনও এরূপ কথা দিয়ে-নিয়ে অনেকে নিজের নতুন বউ ও সন্তানের সৎমা ঘরে আনেন।

গুণ্ডা-পাণ্ডা বনাম গুন্ডা-পান্ডা / ড. মোহাম্মদ আমীন

 গুণ্ডা-পাণ্ডা বনাম গুন্ডা-পান্ডা ণ-ত্ব বিধানে ‘অতৎসম’ শব্দের যুক্তাক্ষরের বানানের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বানান কমিটির সদস্যগণ একমত হতে পারেননি। একটি মতে বলা হয়েছে যে , এসব শব্দের যুক্তাক্ষরে ণ্ট , ণ্ঠ, ণ্ড , ণ্ঢ হবে। যথা : ঘণ্টা , লণ্ঠন , গুণ্ডা । অন্যমতে বলা হয়েছে যে , এসব শব্দের যুক্তাক্ষরে ন্ট , ন্ঠ , ন্ড   হবে। যথা :   ঘণ্টা , প্যান্ট , প্রেসিডেন্ট , লন্ঠন , গুন্ডা , পান্ডা , ব্যান্ড , লন্ডভন্ড । এখানে ঘণ্টা , লণ্ডভণ্ড   প্রভৃতি তৎসম শব্দ। এগুলো কীভাবে অ - তৎসম শব্দের বানানে অন্তর্ভুক্ত হলো ! এসব শব্দ তৎসম বলে ণত্ব বিধানের নিয়মানুসারে মূর্ধন্য-ণ হবে। যেমন : ঘণ্টা , লণ্ঠন , গুণ্ডা । উল্লেখ্য , গুণ্ডা শব্দ { √ গু -+ অ ( ঘঞ + বা . গুণ্ডা ) সংস্কৃত গুণ্ড থেকে আগত । পান্ডা শব্দের অর্থ তীর্থস্থানের পূজারি। শব্দটি এসেছে সংস্কৃত পণ্ডিত থেকে। তাই এখানে মূর্ধন্য - ণ হবে। কিন্তু পান্ডা ( panda ) শব্দ এসেছে নেপালি পান্ডা শব্দ থেকে। এর অর্থ : চীনের বনাঞ্চলে - জাত কচিবংশদণ্ড-ভোজী সংবেদনশীল ভালুকজাতীয়

ঢুঁ-মারা / ড. মোহাম্মদ আমীন

ঢুঁ-মারা ‘ঢুঁ-মারা’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ খোঁজখবর নেওয়া। কোনরূপ উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে কোথাও যাওয়া প্রভৃতি অর্থ প্রকাশে শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যেমন বলা যায় : কোনও কাজ ছিল না, তবু বাজারে একটু ঢঁ-মেরে এলাম। ঢুষ মারা থেকে ঢুুঁ-মারা বাগ্‌ভঙ্গির উৎপত্তি। এটাকে গুঁতো মারাও বলা যায়। এবার ঢুষ কে মারে দেখা যাক। গরু-ছাগল, মহিষ প্রভৃতি গৃহপালিত পশু প্রায়শ সুযোগ পেলেই কোনরূপ ইশারা-ঈঙ্গিত ছাড়াই হঠাৎ ঢুষ মেরে বসে। গৃহপালিত পশুর ঢুষ মারার কোনও উদ্দেশ্য আসলে থাকে না। ইচ্ছে হলো এবং সুযোগ পেল ব্যাস, সঙ্গে সঙ্গে একটা মেরে দিল- এ আর কী! এরূপ ‘ঢুষ মারা’ মূলত গৃহপালিত পশুর ক্ষণিকের আনন্দ। অন্যকে ঢুষ খেতে দেখলে অনেকে আনন্দ পায়। মানুষ যখন গরু-ছাগলের ‘ঢুষ মারার’ মতো উদ্দেশ্যবিহীনভাবে কোথাও যায় কিংবা ঘুরে-বেড়ায় তখন তাকে বলা হয় ঢুঁ-মারা। গরু-ছাগলের শিং আছে, মহিষেরও শিং আছে। তাই তাদের ঢুষে চন্দ্রবিন্দু নেই। কিন্তু মানুষের যেহেতু শিং নেই এবং কপালে শিং লাগানোরও কোনও সুযোগ নেই তাই বাধ্য হয়ে ঢুঁ-মারা বাগ্‌ঙ্গিতে চন্দ্রবিন্দু লাগিয়ে গরুছাগলের উদ্দেশ্যবিহীন কাজটাকে আরও সার্থক ও একনিষ্ঠ করে তোলা হয়েছ

তুলকালাম / ড. মোহাম্মদ আমীন

তুলকালাম `তুলকালাম' শব্দের আভিধানিক অর্থ তুমুল ঝগড়া, প্রচণ্ড-ঝগড়া, দীর্ঘ-বিতর্ক প্রভৃতি। আরবি তুল শব্দের অর্থ বিস্তার এবং ‘কালাম’ শব্দের অর্থ কথা বা বাক্য। অতএব তুলকালাম শব্দের অর্থ হচ্ছে দীর্ঘবাক্য। দীর্ঘ বাক্য মানে দীর্ঘ আলোচনা। আর দীর্ঘ আলোচনা করতে হলে যে দীর্ঘ বাক্য প্রয়োজন তা বাঙালির চেয়ে আর বেশি কে জানে। অতএব ‘তুলকালাম’ শব্দের অর্থ ‘বাগ্বিস্তার’। এ থেকে এসেছে কথা কাটাকাটি, হৈচৈ, চিৎকার, চেঁচামেচি প্রভৃতি। ঝগড়া-ঝাটির প্রধান উপাদান কথা। কথা যত দীর্ঘ ও বিস্তৃত হয় ঝগড়া তত প্রবল ও প্রচণ্ড হয়। আরবি তুলকালাম তথা বাগ্‌বিস্তারের মাধ্যমে বাংলা ঝগড় প্রবল হয়ে ওঠে। তাই আরবি দীর্ঘবাক্য বাংলায় এসে তুলকালাম বা ‘তুমুল ঝগড়া’ অর্থ ধারণ করেছে।

তন্নতন্ন / ড. মোহাম্মদ আমীন

তন্নতন্ন ‘তন্নতন্ন’ শব্দের অর্থ পুঙ্খানুপুঙ্খ, কোনও কিছু বাদ না-দিয়ে, সবিস্তারে প্রভৃতি। তন্নতন্ন সংস্কৃত হতে আগত এবং বাংলা ভাষায় বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। ‘তন্নতন্ন’ শব্দের ‘তন্ন’ হচ্ছে সংস্কত  ‘তৎ ন’ বাগ্‌ভঙ্গির সংক্ষিপ্ত রূপ। এর অর্থ ‘তা নয়’। সুতরাং এ হিসাবে ‘তন্নতন্ন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে তা নয়-তা নয়। কোনও কিছু খুঁজতে গেলে লক্ষ্যবস্তু ছাড়া অনেক কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু লক্ষ্য বস্তু ছাড়া অন্য যা-ই কিছু পাওয়া যাক না কেন, বলা হয় তা নয়, আবারও অপ্রয়োজনীয় কিছু এসে যায় এবং বলা হয় তা নয়, বারবার এমন ঘটে। তাই বারবার উচ্চারিত হয় তা নয়, তা নয়। মানে যা খোঁজা হচ্ছে তা পাওয়া যাচ্ছে না। আরও খুঁজতে হবে। কীভাবে খুঁজতে হবে? ‘তা নয়’ করে করে সবিস্তারে এবং যা নয় সেটিও বাদ না-দিয়ে। আসলে কোনও কিছু খুঁজতে গেলে কোনও কিছু বাদ দেওয়া যায় না। তা-নয়, তা-নয় করে সব কিছু দেখতে হয়। এভাবে তা-নয় শব্দটি হয়ে গেল কোনও কিছু বাদ না-দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা।

দণ্ডায়মান / দণ্ডায়মান

Image
দণ্ডায়মান শব্দটির অর্থ খাড়া, দাঁড়িয়ে আছে এরূপ। দণ্ড থেকে দণ্ডায়মান শব্দের উৎপত্তি। দণ্ড সোজা ও সটান। দণ্ডায়মান অর্থ দণ্ডের মতো সোজা ও সটান। একটি দণ্ডকে খাড়া করে রাখলে যে অবস্থা হয় সেটিই দণ্ডায়মান অবস্থা। কোনও মানুষ যদি দণ্ডের মতো সটান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সেটিই হচ্ছে দণ্ডায়মান।‘দণ্ড’ শব্দের মূল অর্থ হচ্ছে ‘দমন সাধন, দমন কার্য সম্পাদন। যে বস্তু দিয়ে দমন করা যায় সেটি হচ্ছে দণ্ড। ‘দণ্ড’ হচ্ছে দীর্ঘ কিন্তু সোজা ও শক্ত কিন্তু সহজে বহনযোগ্য একটি সরল অস্ত্র, যদ্দ্বারা আঘাত করা যায় এবং আঘাত করলে সহজে আঘাতপ্রাপ্ত জীব দমিত হয়। এটি সাধারণভাবে সবার কাছে লাঠি নামে পরিচিত। এ লাঠি মানুষের আদি অস্ত্র। লাঠি দিয়ে মানুষ প্রথম সহজে আঘাত করতে শেখে, দমন করতে শেখে মানুষ হয়ে মানুষকে কিংবা অন্য জীবকে। তাই বস্তুটির নাম হয় দণ্ড। এ জন্য দণ্ড অর্থে সাজা বা শাস্তিও বুঝায়। একসময় এ লাঠি দ্বারা সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া হতো। তাই এর নাম দণ্ড এবং সাজাপ্রাপ্তকে বলা হয় দণ্ডিত। যদিও এখন দণ্ড বা দণ্ডিত বলতে লাঠির কথা মনে পড়ে না, মনে পড়ে সাজা ও সাজাপ্রাপ্তের কথা। এ দণ্ড হতে ক্রমান্বয়ে উৎপত্তি

কলহ / ড. মোহাম্মদ আমীন

কলহ ‘কলহ’ সংস্কৃত হতে আগত শব্দ। সংস্কৃত ভাষায় শব্দটির অর্থ যুদ্ধ।  তবে ‘কলহ’ শব্দের আভিধানিক ও প্রচলিত অর্থ ঝগড়া,  বিবাদ, বচসা, বাগবিতণ্ড প্রভৃতি। ‘কল’ মানে শব্দ,  ‘অহ’ মানে হনন করা। সুতরাং ব্যাকরণগতভাবে শব্দটির মূল অর্থ ছিল- যা মনোহর ধ্বনি  হনন করে। আসলেই ‘কলহ’,  মনোহর ও মধুময় ধ্বনি হ নন করে মানুষের  কানেকষ্ট ও  যাতনা দেয়।

হোতা / ড. মোহাম্মদ আমীন

হোতা হোতা শব্দের অর্থ নায়ক, নেতা, মূল-ব্যক্তি প্রভৃতি। তবে এটি সাধারণত নেতিবাচক অর্থ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। যেমন : সব গন্ডগোলের হোতা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। সংস্কৃত হতে আগত শব্দটির মূল ও প্রাচীন অর্থ ছিল পুরোহিত কিংবা যজ্ঞকর্তা। সেকালে পুরোহিতই ছিল যজ্ঞকর্মের মুল রূপকার। পুরোহিতের আদেশ-নির্দেশ ও ইচ্ছা-অনিচ্ছায় যজ্ঞকর্ম পরিচালিত হতো। বাঙালিরা সে যজ্ঞকর্মের পুরোহিতকে অপকর্মের পুরোহিত হিসাবে বাংলায় নিয়ে এসেছে। এখন বাংলায় সকল অপর্কমের নায়ককে হোতা বলে প্রকাশ না-করলে যেন বাক্যের মজাই থাকে না।