প্রবাদ-প্রবচন ও বাগধারা/ ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

প্রবাদ ও প্রবচন

‘বদ্’ ধাতু নিষ্পন্ন ‘বাদ’ শব্দের পূর্বে ‘প্র’ উপসর্গ যুক্ত হয়ে ‘প্রবাদ’ এবং ‘বচ্’ ধাতু নিষ্পন্ন ‘বচন’ শব্দের পূর্বে একই উপসর্গ যুক্ত হয়ে ‘প্রবচন’ শব্দের উৎপত্তি। ‘বদ্’ ও ‘বচ্’ উভয় ধাতুর অর্থ বলা। ‘বাদ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ উক্তি, কথন, বাক্য; অন্যদিকে বচন শব্দের আভিধানিক অর্থও কথা, বাক্য, উক্তি। সুতরাং ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিবেচনায় ‘প্রবাদ’ ও ‘প্রবচন’-এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু উভয়ের প্রায়োগিক-রূপে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। প্রবাদ ও প্রবচন-রূপে যে সব রচনা পাওয়া যায় সেগুলো সুক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে এ পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠে।
`প্রবাদ' ব্যঞ্জননির্ভর কিন্তু `প্রবচন' বাচ্যনির্ভর। মূলত এটিই উভয়ের মূল পার্থক্য। চয়নসূত্রে প্রবাদের একটি বাচ্যার্থ থাকে কিন্তু প্রবাদটি প্রকৃতপক্ষে সে অর্থে ব্যবহৃত হয় না; ব্যঞ্জনার্থেই ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ ‘ছাড় কড়ি মাখ তেল’- প্রবাদটির কথা বলা যায়। বাক্যটির সাধারণ অর্থ : ‘তেল গায়ে মাখতে হলে টাকা দিয়ে কিনতে হয়’। কিন্তু প্রবাদটি যখন বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন সাধরণ অর্থ লোপ পেয়ে গূঢ়ার্থই কেবল প্রকাশ পায়। এর গূঢ়ার্থ হচ্ছে : অর্থ ছাড়া কিছু হয় না বা টাকা ছাড়া সংসাকে কিছুই পাওয়া যায় না।

ক্রমশ:

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন